আউশ মৌসুমে ধানে সম্ভাব্য পোকামাকড়ের আক্রমণ ও প্রতিকার
ড. শেখ শামিউল হক
ধান আমাদের দেশের প্রধান খাদ্যশস্য। উফশী ধান নিবিড় ও উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ধানের ২৩২ প্রজাতির ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০-৩৩ প্রজাতিকে প্রধান অনিষ্টকারী পোকা হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্ষতির মাত্রা সাধারণত পোকার প্রজাতি, পোকার সংখ্যা, উপদ্রæত এলাকার সামগ্রিক পরিবেশ, উপদ্রæত ক্ষেতের বা তার আশপাশের অবস্থা, ধানের জাত, ধান গাছের বয়স, উপকারী পরভোজী ও পরজীবী পোকামাকড়ের সংখ্যা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। দেখা গেছে, প্রধান প্রধান ক্ষতিকর পোকার আক্রমণের জন্য আউশ মৌসুমে শতকরা প্রায় ২৪ ভাগ ধানের ফলন নষ্ট হয়। আউশ ধানে সাধারণত মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধি পোকা, ছাতরা পোকা, ঘাসফড়িং এবং শীষকাটা লেদা পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে।
মাজরা পোকা
বাংলাদেশে তিন ধরনের মাজরা পোকা ধানের ক্ষতি করে থাকে, যেমনÑ হলুদ মাজরা, কালো মাথা মাজরা এবং গোলাপি মাজরা পোকা। এ পোকাগুলোর কীড়ার রং অনুযায়ী এদের নামকরণ করা হয়েছে। এদের আকৃতি ও জীবন বৃত্তান্তে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও ক্ষতির ধরন এবং দমন পদ্ধতি একই রকম। হলুদ মাজরা পোকা সাধারণত বেশি আক্রমণ করে থাকে। পূর্ণবয়স্ক হলুদ মাজরা পোকা এক ধরনের মথ। স্ত্রী পোকার পাখার উপরে দুটো কালো ফোঁটা আছে। পুরুষ মথের পাখার মাঝখানের ফোঁটা দুটো স্পষ্ট নয় তবে পাখার পিছন দিকে ৭-৮ টা অস্পষ্ট ফোঁটা আছে। হলুদ মাজরা পোকার স্ত্রী মথ ধান গাছের পাতার আগার দিকে গাদা করে ডিম পাড়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে ডিম ফুটে কীড়া বের হয়। কীড়ার রং সাদাটে হলুদ। কীড়াগুলো কাÐের ভেতরে প্রবেশ করে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহে পুত্তলিতে পরিণত হয়। তবে শীতকালে কীড়ার স্থিতিকাল ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে। পুত্তলিগুলো এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে বয়স্ক পোকায় পরিণত হয় এবং কাÐের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে।
ক্ষতির ধরন : মাজরা পোকা শুধু কীড়া অবস্থায় ধান গাছের ক্ষতি করে থাকে। সদ্য ফোঁটা কীড়াগুলো দু’চার দিন খোল পাতার ভিতরের অংশ খাওয়ার পর ধান গাছের কাÐের ভেতর প্রবেশ করে। কাÐের ভেতর থেকে খাওয়ার সময় এক পর্যায়ে মাঝখানের ডিগ কেটে ফেলে। ফলে মরা ডিগের সৃষ্টি হয়। গাছের শীষ আসার আগে এরকম ক্ষতি হলে তাকে ‘মরাডিগ’ বলে। আর গাছে থোর হওয়ার পর বা শীষ আসার সময় ডিগ কাটলে শীষ মারা যায় বলে একে ‘সাদাশীষ’ বলে। ‘সাদাশীষে’ ধান চিটা হয়ে যায়। বোরো, আউশ এবং রোপা আমন তিন মৌসুমেই পোকার আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা
মাজরা পোকার ডিমের গাদা সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেলা। ক্ষেতে ডাল-পালা পুঁতে দিয়ে পোকা খেকো পাখির সাহায্যে পোকার সংখ্যা কমানো যায়। সন্ধ্যার সময় আলোক ফাঁদের সাহায্যে মথ আকৃষ্ট করে মেরে ফেলা সম্ভব। হাতজাল ব্যবহার করে পোকা ধরে মেরে ফেলা যায়। রোপা আমন ধান কাটার পর নাড়া চাষ বা পুড়িয়ে মাজরা পোকার ৮০% কীড়া ও পুত্তলি নষ্ট করা যায়। উপর্যুক্ত উপায়সমূহে দমন করা সম্ভব না হলে প্রতি বর্গমিটারে ২-৩টি স্ত্রী মথ বা ডিমের গাদা, অথবা গাছ মাঝ কুশি অবস্থায় ১০-১৫% মরাডিগ অথবা ৫% মরা শীষ দেখা গেলে কীটনাশক ফ্লুবেনডিয়ামাইড ২৪ ডবিøউজি (২০০ গ্রাম/হেক্টর), কার্টাপ ৫০ পাউডার (১.৪ কেজি/হেক্টর), ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল + থায়ামেথোক্সাম ৪০ ডবিøউজি (৭৫ গ্রাম/হেক্টর), ক্লোরানট্রানিলিপ্রোল + থায়ামেথোক্সাম ০.৬ দানাদার (৫.০ কেজি/হেক্টর), কার্বোসালফান ২০ তরল (১.৫ লিটার/হেক্টর), ফিপ্রোনিল ৩ দানাদার (১০.০ কেজি/হেক্টর), ফিপ্রোনিল ৫০পানিতে দ্র্রবণীয় (০.৫ লিটার/হেক্টর), ক্লোরপাইরিফস ২০ তরল (১.০ লিটার/হেক্টর) অথবা অনুমোদিত যে কোনো কীটনাশক বোতলে বা প্যাকেটে উল্লিখিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। তবে ক্ষেতে মাকড়সা, পরজীবী পোকার সংখ্যা বেশি হলে কীটনাশক ব্যবহার না করলেও চলে।
পাতা মোড়ানো পোকা
পূর্ণবয়স্ক পাতা মোড়ানো পোকা এক ধরনের মথ। গায়ের রং বাদামি এবং পাখায় আড়াআড়িভাবে ২-৩টি দাগ থাকে। এ পোকার জীবনচক্রে চারটি স্তর থাকে (ডিম, কীড়া, পুত্তলি এবং পূর্ণবয়স্ক মথ)। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী মথ পাতার মধ্যশিরার কাছে একটা একটা করে ডিম পাড়ে এবং ৫-৭ দিনের মধ্যে ডিম থেকে কীড়া বের হয়। কীড়াগুলো মোড়ানো পাতার মধ্যেই জীবন কাটায়। তিন থেকে চার সপ্তাহে কীড়া পুত্তলিতে পরিণত হয়। পুত্তলির জীবনকাল এক সপ্তাহ এবং পূর্ণবয়স্ক মথ ৭-১০ দিন বেঁচে থাকতে পারে।
ক্ষতির ধরন : ডিম থেকে ফোটার পর কীড়াগুলো গাছের মাঝখানের দিকের পাতার একেবারে মাথায় দু-একদিন কুরে কুরে খায়। তারপর আস্তে আস্তে মুখের লালা দিয়ে পাতাকে লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে নলাকার করে ফেলে এবং মোড়ানো পাতার মধ্যে থেকে পাতার সবুজ অংশ কুরে কুরে খায়। ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় প্রথম দিকে সাদা লম্বা দাগ দেখা যায়। খুব বেশি ক্ষতি করলে পাতাগুলো পুড়ে যাওয়ার মত দেখায়। আক্রমণ বেশি হলে ফসলের শতভাগ ক্ষতি হতে পারে।
দমন ব্যবস্থাপনা
সন্ধ্যার সময় আলোক ফাঁদের সাহায্যে মথ আকৃষ্ট করে মেরে ফেলা। হাতজালের সাহায্যে পূর্ণবয়স্ক পোকা ধরে মেরে ফেলা। ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে (পার্চিং) পোকা খেকো পাখির সাহায্যে দমন করা। শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কীটনাশক স্পিনোস্যাড ৪৫ এসসি (০.৫ লিটার/হেক্টর), স্পিনোস্যাড ২.৫ এসসি (০.৭৫ লিটার/হেক্টর), কার্বারিল ৮৫ পাউডার (১.৭ কেজি/হেক্টর), ক্লোরোপাইরিফস ২০ তরল (১.০ লিটার/হেক্টর), আইসোপ্রোকার্ব/এমআইপিসি ৭৫ পাউডার (১.১২ কেজি/হেক্টর) অথবা অনুমোদিত যে কোনো কীটনাশক বোতলে বা প্যাকেটে উল্লিখিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
গান্ধি পোকা
পূর্ণবয়স্ক গান্ধি পোকা ধূসর রংয়ের এবং কিছুটা সরু আকৃতির। পা এবং শুঁড় দু’টো লম্বা। গান্ধি পোকা ধানের পাতা ও শীষের উপর সারি করে ডিম পাড়ে। সবুজ রংয়ের বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক গান্ধি পোকার গা থেকে বিশ্রী গন্ধ বের হয়।
ক্ষতির ধরন : বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক উভয়ই ধান গাছের দানা থেকে রস শুষে খায়। সব মৌসুমেই এ পোকা আক্রমণ করে। তবে একই এলাকায় আগে বা পরে লাগানো জমিতে এর প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা
আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা। এলাকায় একই সময়ে জমিতে ধান রোপণ করে এ পোকার আক্রমণ কমানো যেতে পারে। ধান ক্ষেতের অধিকাংশে যদি প্রতি গোছায় ২-৩টি গান্ধি পোকা দেখা যায় তবে কীটনাশক ক্লোরোপাইরিফস ২০ তরল (১.০ লিটার/হেক্টর), এমআইপিসি/আইসোপ্রোকার্ব ৭৫ পাউডার (১.১২ কেজি/হেক্টর), কার্বারিল ৮৫ পাউডার (১.৭০ কেজি/হেক্টর), ম্যালাথিয়ন ৫৭ তরল (১.১২ লিটার/হেক্টর) অথবা অনুমোদিত যে কোনো কীটনাশক বোতলে বা প্যাকেটে উল্লিখিত মাত্রায় প্রয়োগ করা যায়। কীটনাশক দুপুরের পর প্রয়োগ করতে হবে।
ছাতরা পোকা
স্ত্রী ছাতরা পোকা খুব ছোট, ২-৩ মিলিমিটার লম্বা, দেহ নরম এবং গায়ের রং গোলাপি। এদের গায়ের উপর সাদা মোম জাতীয় পদার্থ থাকে। এদের কোনো পাখা নেই। এরাই গাছের ক্ষতি করে। পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকার অনুপাতে সংখ্যায় খুবই কম, ফলে বিশেষ ক্ষতি করতে পারে না। পুরুষ পোকার দুটো পাখা আছে। স্ত্রী পোকা গাছের কাÐ ও খোল পাতার মধ্যবর্তী স্থানে মোমজাতীয় পদার্থের কুÐলির মধ্যে ডিম পারে। তিন থেকে ছ’ঘন্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়স্ক ছাতরা পোকায় পরিণত হতে ১২-১৮ দিন সময় লাগে। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ছাতরা পোকাগুলো ৯-২৯ দিন বেঁচে থাকতে পারে। অনুক‚ল আবহাওয়ায় ছাতরা পোকা ১২-১৮ দিনে একটি জীবনচক্র শেষ করতে পারে এবং বছরে ১১ বার প্রজন্ম বা বংশবিস্তার করতে পারে।
গোলাপি রঙের পোকাগুলো গাছের কাÐ ও খোল পাতার মধ্যবর্তী স্থানে সাদা মোম জাতীয় পদার্থের মধ্যে থাকে। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ছাতরা পোকা ও বাচ্চাদের কোনো পাখা থাকে না। বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক উভয়ই ধান গাছের ক্ষতি করে থাকে। আউশ মৌসুমে এর প্রকোপ বেশি, তবে অন্যান্য মৌসুমেও হতে পারে।
ক্ষতির ধরন : বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক ছাতরা পোকা এক সাথে অনেক সংখ্যায় থাকে এবং গাছের রস শুষে খায়। আক্রান্ত গাছের খোল পাতায় সাদা মোম জাতীয় পদার্থ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছ খাটো ও হলদে হয়ে যায়। আক্রমণ তীব্র হলে গাছের শিষ বের হয় না।
দমন ব্যবস্থাপনা
আক্রান্ত গাছ উপড়িয়ে মাটিতে পুতে ফেলা বা আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা। ছাতরা পোকার আক্রমণ যেহেতু বিক্ষিপ্তভাবে ক্ষেতের এখানে সেখানে হয়, সেহেতু সম্পূর্ণ ক্ষেতের পরিবর্তে শুধু আক্রান্ত জায়গায় ভালো করে কীটনাশক ছিটালে দমন খরচ অনেক কমে যায়। আক্রান্ত ধান গাছে কীটনাশক যেমন- ম্যালাথিয়ন ৫৭ তরল (১.১২ লিটার/হেক্টর), কার্বোসালফান ২০ তরল (১.১২ লিটার/হেক্টর), এমআইপিসি ৭৫ পাউডার (১.৩ কেজি/হেক্টর) এর যেকোনো একটি অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
ঘাসফড়িং
পূর্ণবয়স্ক ঘাসফড়িং ৩-৪ সেন্টিমিটার লম্বা। পিছনের পা দুটো লম্বা হওয়ায় এরা লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। এদের গায়ের রং হালকা সবুজ অথবা হলদে বাদামি রংয়ের হয়ে থাকে। স্ত্রী ফড়িং মাটির মধ্যে ডিম পাড়ে। ডিম থেকে বাচ্চা ফুঁটতে ১৫-১৮ দিন লাগে। আবহাওয়া ভেদে বাচ্চা আড়াই থেকে তিন মাস এবং পূর্ণবয়স্ক ফড়িং দেড় থেকে দুই মাস বেঁচে থাকে। এদের জীবন চক্র শেষ হতে প্রায় তিন মাস লাগে।
ক্ষতির ধরন : বাচ্চা এবং পূর্ণবয়স্ক ঘাসফড়িং উভয়েই ধান গাছের ক্ষতি করে। এরা গাছের পাতার কিনারা থেকে কেটে কেটে খায়। আক্রমণ বেশি হলে এরা পাতার মধ্যশিরা বাদে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলতে পারে। এ ধরনের ক্ষতির ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ফলন কমে যায়। আউশ মৌসুমে এ পোকার প্রাদূর্ভাব বেশি হলেও বোরো ও রোপা আমন ফসলেও এর আক্রমণ দেখতে পাওয়া যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা
হাতজাল দিয়ে পোকা ধরে মেরে ফেলা। ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখি বসার ব্যবস্থা করা। শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে কীটনাশক কার্বোসালফান ২০ তরল (১.৫ লিটার/হেক্টর), এমআইপিসি/আইসোপ্রোকার্ব (১.০০ লিটার/ হেক্টর), কুইনালফস ২৫ তরল (১.৫ লিটার/হেক্টর) অথবা অনুমোদিত যে কোনো কীটনাশক বোতলে বা প্যাকেটে উল্লিখিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।
শীষকাটা লেদা পোকা
শীষকাটা লেদা পোকার পূর্ণবয়স্ক পোকা একটি মথ। শুধু কীড়াই ধান গাছের ক্ষতিসাধন করে থাকে। বোনা ও রোপা আমন ফসলের এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর পোকা।
ক্ষতির ধরন : কীড়াগুলো প্রথম দিকে গাছের পাতার পাশ থেকে কেটে খায়। কীড়াগুলো বড় হলে আধা পাকা বা পাকা ধানের শীষগুলো কেটে দেয়। কীড়াগুলো রাতে তৎপর থাকে এবং দিনের বেলায় গাছের গোড়ায় বা জমির ফাটলে লুকিয়ে থাকে।
দমন ব্যবস্থাপনা
ধান কাটার পর জমি চাষ বা নাড়া পুড়িয়ে দিলে ক্ষেতে লুকিয়ে থাকা কীড়া ও পুত্তলি মারা যায় ফলে পরবর্তী মৌসুমে এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখির সাহায্যে দমন করা। আক্রান্ত জমিতে সেচ দিয়ে মাটিতে থাকা কীড়া মেরে ফেলুন। আক্রমণ বেশি হলে কার্বারিল ৮৫ পাউডার (১.৭০ কেজি/হেক্টর) কীটনাশক বা অনুমোদিত যে কোনো কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করা যায়। দিনের আলোতে লুকিয়ে থাকা পোকাগুলো সন্ধ্যার সময় যখন ধান গাছে দেখা যায় তখন কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
উপরের আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, ধানের পোকামাকড় দমন করার জন্য ব্যবহারোপযোগী বিভিন্ন দমন পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু কোথায় কোন দমন পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে এবং তা দ্বারা কেমন সুফল পাওয়া যাবে তা নির্ভর করে সমস্যার ক্ষেত্র ও তার প্রকৃতির উপর-অর্থাৎ যে এলাকায় বা ক্ষেতে পোকার আক্রমণ হয়েছে তার সামগ্রিক পরিবেশ ও অবস্থানের উপর, আক্রমণকারী পোকার সংখ্যা, আক্রমণের প্রকৃতি ও ব্যাপকতা এবং পোকার জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর এবং আক্রান্ত ফসলের সামগ্রিক অবস্থার উপর। অন্য কথায়, নিয়মিতভাবে ক্ষেত পর্যবেক্ষণের ফলাফলই বলে দেবে কোন পদ্ধতি কোন ক্ষেতে কার্যকরী হবে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে শুধু একটি মাত্র পদ্ধতিই কোন ক্ষেতে পোকা দমনের ব্যাপারে যথেষ্ট হবে, তা নয়। দরকার হলে একটিরও বেশি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। য়
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান, কীটতত্ত¡ বিভাগ, ব্রি, গাজীপুর, মোবাইল : ০১৫৫২৪৯৫৫১৪; ই-মেইল :shamiulent@gmail.com